রাজশাহী: বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর রাজশাহী মহানগর শাখা 'জুলাই সনদ'-এর পূর্ণ বাস্তবায়ন এবং জাতীয় নির্বাচনের আগে গণভোটসহ পাঁচ দফা দাবিতে এক বিক্ষোভ সমাবেশ ও মিছিল করেছে।
কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে শুক্রবার (১৪ নভেম্বর) দুপুর ২টার দিকে নগরের গণকপাড়া মোড়ে এই কর্মসূচি পালিত হয়।
সমাবেশ শেষে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয় যা আলুপট্টি মোড় ও সাহেববাজার প্রদক্ষিণ করে পুনরায় গণকপাড়া মোড়ে এসে শেষ হয়।
সমাবেশে বক্তারা জাতীয় নির্বাচনের আগেই গণভোটের মাধ্যমে ‘বিপ্লব-পরবর্তী রাজনৈতিক কাঠামো’ নির্ধারণের দাবি জানান। তারা বলেন, জনগণের সরাসরি সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রক্রিয়া গণতন্ত্রকে শক্তিশালী করবে এবং একদলীয় শাসনের অবসান ঘটাবে। তাদের মতে, স্বৈরশাসন রোধে জুলাই সনদের বাস্তবায়নের কোনো বিকল্প নেই।
অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্দেশে বক্তারা বলেন, কোনো প্ররোচনায় বিভ্রান্ত না হয়ে ছাত্র-জনতার আত্মত্যাগকে সম্মান জানাতে হবে এবং তাদের রক্তের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করা যাবে না। তারা অভিযোগ করেন, যারা দেশে ফ্যাসিবাদ প্রতিষ্ঠা করতে চায়, তারাই জুলাই সনদের বাস্তবায়নকে বাধাগ্রস্ত করার চেষ্টা করছে। বক্তারা আরও বলেন, নির্বাচন এলেই ধর্মের লেবাস ধরে তারা রাজনৈতিক সুবিধা নিতে চায়। জনগণ ইতিমধ্যে তাদের প্রত্যাখ্যান করেছে বুঝতে পেরে তারা এখন মসজিদে হামলা করে পরিস্থিতি অস্থিতিশীল করার অপচেষ্টা করছে।
রাজশাহী মহানগর জামায়াতের নায়েবে আমীর অ্যাডভোকেট আবু মোহাম্মদ সেলিমের সভাপতিত্বে এবং সেক্রেটারি ইমাজ উদ্দিন মণ্ডলের সঞ্চালনায় সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন রাজশাহী-২ আসনের জামায়াত মনোনীত সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী ডা. মোহাম্মাদ জাহাঙ্গীর, মহানগর জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি অধ্যক্ষ মাহবুবুল আহসান বুলবুল এবং মো. শাহাদৎ হোসাইনসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।
'জুলাই সনদ' বা 'জুলাই জাতীয় সনদ ২০২৫' হলো বাংলাদেশের একটি রাজনৈতিক সনদ, যেখানে দেশের রাজনৈতিক কাঠামো সংস্কারের জন্য বিভিন্ন গণতান্ত্রিক প্রস্তাবনা অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। ২০২৪ সালের জুলাই মাসের গণঅভ্যুত্থানের পর গঠিত অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অধীনে এই সনদটি রাজনৈতিক দলগুলোর ঐকমত্যের ভিত্তিতে তৈরি করা হয়। এর মূল লক্ষ্য হলো রাষ্ট্রের বিভিন্ন ক্ষেত্রে সংস্কার সাধন করে একটি স্থিতিশীল গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করা।
সারাদেশে জামায়াতে ইসলামী এবং তাদের সহযোগী দলগুলো এই পাঁচ দফা দাবিতে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করছে। তাদের অন্যতম প্রধান দাবি হলো, নভেম্বরের মধ্যেই গণভোট আয়োজন করতে হবে।
মোঃ মাসুদ রানা রাব্বানী :